সূচনা(Introduction)
ড্রাফটিং হলো কোনো একটি বস্তুকে কাগজের উপর নিয়মতান্ত্রিক রেখাসমূহের মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশল। প্রকৌশল প্রযুক্তি কার্যক্রমে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ড্রাফটিং বা নকশার ব্যবহার অতি প্রাচীন। ভাই ড্রাফটিং শিক্ষা, শিক্ষাক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ড্রাফটিং কাজে টি-স্কয়ার (T- Square) সেট স্কয়ার (Set square), কম্পাস (Compass), ইরেজার (Eraser) ইত্যাদি ব্যবহার করে নকশা অংকন করা হয়। বর্তমানে ড্রাফটিং নকশা অংকনের ক্ষেত্রে কম্পিউটার প্রয়োগের ফলে উক্ত যন্ত্রপাতির ব্যবহার নাই বললেই চলে। কম্পিউটারের সাহায্যে নকশা অংকন ও ডিজাইন করার পদ্ধতিকে কম্পিউটার এডেড ডিজাইন বা ক্যাড (CAD) নামে অভিহিত করা হয়। বাস্তবে ক্যাড হলো অংকন ও ডিজাইন করার একটি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি যাতে কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির প্রয়োজন হয় ।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
উপর্যুক্ত শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা চারটি জব সম্পন্ন করব। এ জবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ড্রাফটিং কাজে OSH নীতি অনুসরণ পূর্বক ড্রাফটিং টুলস, ইকুইপমেন্ট ও যন্ত্রপাতি সনাক্তকরণ এবং সংরক্ষণ করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমেই প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানব।
ড্রইং ও ড্রাফটিং (Drawing and Drafting):
ড্রইং (Drawing)
ড্রইং একটি সার্বজনীন স্বীকৃত ভাষা যা মানব সভ্যতার শুরু থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। কতগুলো রেখাকে সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করে কোনো বস্তুকে কাগজ বা অন্য কোনো তলে উপস্থাপন করার কৌশলকে ড্রইং নামে অভিহিত করা হয়। ৰাস্তব বস্তুকে চিত্রে উপস্থাপন করা, পরিকল্পনা করা অথবা বস্তুর সংরক্ষণ অংকনের সাহায্যে সম্ভব হয়। ড্রইং বা অংকনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা
১। শৈল্পিক ড্রইং (Artistic Drawing) যা শিল্পীর মন, হাত, রঙ তুলির সাহায্যে উদ্ভাসিত এবং
২। প্রকৌশল ড্রইং (Engineering Drawing) প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ কর্তৃক উদ্ভাসিত ড্রইং
শৈল্পিক ড্রইং(Artistic Drawing): শিল্পীর মন, হাত, ভুলি, রঙ সাহায্যে আঁকা শিল্পকর্মকে শৈল্পিক ড্রইং বলে। যেমন- শিল্পীর আঁকা ছবি।
প্রকৌশল ড্রইং(Engineering Drawing): কতকগুলো রেখাকে সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম ইন্জিনিয়ারিং বস্তু যেমন- বিল্ডিং, রোড, ব্রিজ, মেশিন ইত্যাদিকে কাগজে উপস্থাপনের কৌশল হলো প্রকৌশল ড্রইং। প্রকৌশল ড্রইং করার কাজে সব সময় ড্রইং ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয়। একটি বস্তুর গঠনে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য ও মানানসই স্কেল সহযোগে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং করা হয়ে থাকে।
ইঞ্জিনিয়ারিং দৃষ্টি কোণ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং বিষয়টিকে সুলত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) জিওমেট্রিক্যাল (Geometrical) ড্রইং
(২) মেকানিক্যাল (Mechanical) ড্রইং
(৩) সিভিল (Civil) ড্রইং
(B) ইলেকট্রিক্যাল (Electrical) ড্রইং
(৫) অ্যারোনটিক্যাল (Aeronatical) ড্রইং
(৬) আর্কিটেকচারাল (Architechtural) ড্রাফটিং
(৭) প্রোসেস পাইপিং (Process Piping) বা পাইপ লাইন ড্রাফটিং ইত্যাদি।
জিওমেট্রিক্যাল (Geometrical) ড্রইং
জ্যামিতিক বন্ধু যেমন-ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র, কোণ, পিরামিড, প্রিজম ইত্যাদি বন্ধুকে কাপজে উপস্থাপন করার কৌশলই জিওমেট্রিক্যাল। জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং আবার দুই ভাগে বিভক্ত। যথা-
(১) প্লেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Plain Geometrical Drawing)
(২) সলিড জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Salld Geometrical Drawing)
(১) গ্রেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Plain Geometrical Drawing) দ্বিমাত্রিক বস্তু যেমন- ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক বস্তুর কাগজে অংকন প্রক্রিয়াকে প্লেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং বলে।
(২) সলিড জিওমেট্রিক্যাল ইং (Solid Geometrical Drawing) ত্রিমাত্রিক বস্তু যেমন- কৌণ, সিলিন্ডার, প্রিজম, পিরামিড, কিউৰ জাতীয় জ্যামিতিক বস্তুর কাগজে অংকন প্রক্রিয়াকে সঙ্গিড জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং বলে।
আরও দেখুন...